সবুজ ত্রিপুরা, চুড়াইবাড়ি প্রতিনিধি,
২২ এপ্রিল : সন্ত্রাসের স্মৃতি
আরও একবার তাজা হল শ্রীলঙ্কার দ্বীপভূমিতে। রবিবার,
২১শে এপ্রিল
পরপর আত্মঘাতী বোমা হামলায় তিনটি খ্রিস্টান চার্চ এবং রাজধানী কলম্বোর তিনটি বিলাসবহুল
হোটেলকে সমন্বয়িত
আত্মঘাতী বোমা হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। একই দিনে, ডিমাতাগোডায়
একটি হাউজিং কমপ্লেক্স এবং দেহিওয়ালার
একটি গেস্ট হাউসেও ছোট
বিস্ফোরণ ঘটে। শ্রীলংকায় বেশ কয়েকটি শহর ছিল এই প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের লক্ষ্যবস্তু।
বিস্ফোরণে
অন্তত ৪৩ জন বিদেশী
নাগরিক ও তিন পুলিশ কর্মকর্তা সহ প্রায় ৩৫৯ জন
নিহত হয়েছেন এবং কমপক্ষে ৫০০ জন আহত
হয়েছেন।
রবিবার পবিত্র ইস্টার
প্রার্থনার সময়
নেগম্বো, বাট্টিকালোয়া এবং কলম্বোতে গির্জার বোমা বিস্ফোরণগুলি সংঘটিত হয়। আক্রান্ত হোটেলগুলি
হল - সাংগ্রি-লা, সিনাম্যান গ্র্যান্ড, কিংসবেরি এবং ট্রপিক্যাল ইন। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, একযোগে এই সাতটি
আত্মঘাতী বোমা হামলায় জড়িত ছিল সন্দেহভাজন বিদেশী বন্ধন নিয়ে একটি স্থানীয় জঙ্গি ইসলামপন্থী গ্রুপ জাতীয় থাউহিদ জামায়াতের
অন্তর্গত
শ্রীলংকার নাগরিকরা। খ্রিস্টানদের ইস্টার রবিবারের সেবা উদযাপনকে
কেন্দ্র করে, শ্রীলঙ্কার চারপাশে গির্জা এবং হোটেলগুলিকে আত্মঘাতী হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এই আত্মঘাতী বোমা হামলার ক্রম ও সমন্বয় করা হয়েছিল সর্বাধিক
ধ্বংসযজ্ঞের পরিকল্পনা করে, বিশেষতঃ
দ্বীপের সর্বত্র খ্রিস্টানদেরকে লক্ষ্য
করে এবং
রাজধানীতে বিলাসবহুল সমুদ্রসৈকত নিকটবর্তী হোটেলে
অবস্থানরত অতিথিদের
লক্ষ্য
করে।
কিংসবারি হোটেল, কলম্বো |
প্রথম বোমাটি রাজধানী কলম্বোর ঐতিহাসিক
গির্জা সেন্ট অ্যান্থনি চার্চে ঘটে, যেখানে ৫০ জনেরও বেশি
মানুষ মারা যায়। দ্বিতীয়টি
কলম্বো ও শ্রী জয়বর্ধনেপুরাকোট্টের উত্তরে
অবস্থিত
খ্রিস্টীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ নেগম্বো শহরের
সেন্ট সেবাস্তিয়ানস গীর্জায়
বিস্ফোটিত হয়, যেখানে অন্তত ৪০ জন
নিহত হন। সেন্ট সেবাস্তিয়ানস শ্রীলঙ্কার প্রধান বিমান বন্দর
বান্দরানাইকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেও অবস্থিত। এছাড়াও বাট্টিকোলার একটি
প্রটেস্টান্ট ধর্মাবলম্বী গীর্জায়ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, যেখানে যেখানে অন্তত ৪০ জন
মারা যায়। এদের মধ্যে ৯ জন পর্যটকও ছিলেন।
খ্রিস্টান উপাসনালয় ছাড়াও
আত্মঘাতীরা রাজধানীর তিনটি বিলাসবহুল হোটেলকে তাদের নিশানা বানায়, যথাক্রমে-
সাংগ্রি-লা হোটেল, দ্য সিনামন গ্র্যান্ড হোটেল এবং কিংসবারি হোটেল। পরে দেহিওয়ালার
একটি অতিথিবাস ট্রপিক্যাল ইন ও দেমাটাগোডার একটি আবাসনেও বোমা হামলা ঘটানো হয়,
যেখানে পুলিশ কর্মীসহ মোট ৫ জন নিহত হয়। শ্রীলঙ্কার
প্রধান বিমান বন্দর বান্দরানাইকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও বিস্ফোরক যন্ত্র পাওয়া যায়,
কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিমান বাহিনী সেটি ধ্বংস করতে সমর্থ হয়।
সমগ্র দেশ জুড়ে শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এদিনই স্থানীয় সময় সন্ধ্যা
৬.০০ টা থেকে কার্ফ্যু জারী করে জরুরী অবস্থা করেছে এবং পরদিনই জাতীয় শোক দিবসরূপে
পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিরাপত্তার দরুন সকল প্রকার সামাজিক মাধ্যমগুলোর
যোগাযোগ সীমিত করে দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন সুবিধা সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য
বন্ধ রেখেছে।
0 মন্তব্যসমূহ