চুরাইবাড়ি জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদ্‌যাপন

সবুজ ত্রিপুরা, চুড়াইবাড়ি প্রতিনিধি, ২০ মে : বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে চুরাইবাড়ির ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহার এবং প্রজ্ঞা আলো তরুণ সংঘের যৌথ উদ্যোগে পালিত হল বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি। উনাদের সামাজিক কর্মযজ্ঞে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ধর্মনগরের কল্পনা সেবাশ্রমের কর্মীরা। শনিবার ১৮ মে বুদ্ধ পূর্ণিমার পুণ্য তিথিতে প্রথমে বিশ্বশান্তি কল্পে র‍্যালি ও পতাকা উত্তোলন, তারপর রকমারি ফল-মূল দিয়ে ২৮ জন বুদ্ধ দেবতার পুজো করা হয়। পাশাপাশি চুড়াইবাড়ি এলাকার দায়ক-দায়িকা সহ সকল স্তরের জনগণের জন্য অন্নভোগের আয়োজন করা হয়। রাজ্য ও বহিঃরাজ্য থেকে অনেক ভিক্ষুরা চুরাইবাড়ি জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহারে আসেন।

চুরাইবাড়ির জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান    ছবি: কিশোররঞ্জন হোর

এ উপলক্ষ্যে প্রায় ৫০ জন দায়ক-দায়িকারা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। এই রক্তদান শিবিরে চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মী সহ উত্তর জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তা জগদীশ নমঃ উপস্থিত থেকে সকল রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন। এমনকি ভিক্ষুরাও স্বেচ্ছায় রক্তদান করার জন্য এগিয়ে আসেন। পাশাপাশি জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহার ও প্রজ্ঞা আলো তরুণ সংঘের উদ্যোগে কদমতলা গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে ফলবিতরণ এবং আর্থিক অনুদানও দেওয়া হয়। বৌদ্ধ বিহার চত্বর লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

এদিকে চুরাইবারি জ্ঞানোদয় বুদ্ধ বিহার ও প্রজ্ঞা আলো তরুণ সংঘের কর্মীরা জানানয যে, উত্তর জেলায় মাত্র দুটি জ্ঞানোদয় বুদ্ধ বিহার রয়েছে তারমধ্যে চুড়াইবাড়ি জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহারটি পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী। ১৯৮২ সালে এই বুদ্ধ বিহারটি রেজিস্ট্রেশন পায়। প্রতিবছর কিছু না কিছু ছোটখাটো সামাজিক কর্মযজ্ঞে অংশ নেয় এই বৌদ্ধ বিহারটি। কিন্তু এবার  তাঁরা প্রজ্ঞা আলো তরুণ সংঘ নামক একটি সামাজিক সংস্থার যৌথ উদ্যোগে নানা সামাজিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

কর্মীরা আরো জানান, ১৯৮২ সালে চুরাইবারি জ্ঞানোদয় বুদ্ধ বিহার রেজিস্ট্রেশন পেলেও আজ পর্যন্ত কোন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পাননি। বুদ্ধ বিহারের হলঘর থেকে শুরু করে যে রুমে বুদ্ধের মূর্তি রয়েছে সে ঘরে জল পড়ে। যদি সরকার উনাদেরকে একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে উনারা বৌদ্ধ বিহারের মন্দির ও হলঘরের মেরামতি করতে পারবেন। উল্লেখযোগ্য যে, চুরাইবারি এলাকায় ৩০ থেকে ৩২ টি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পরিবার বসবাস করেন। সুতরাং উনারা চাঁদা করে যে অর্থ সংগ্রহ করেন তা দিয়ে বুদ্ধদেবের পুজো ছাড়া মন্দির সংস্কার হয়ে উঠে না। তাই চুড়াইবাড়ি জ্ঞানোদয় বৌদ্ধ বিহারের সকল কর্মকর্তাগণ সরকারের সহযোগিতা চাইছেন।

আরও পড়ুন : ভগবান বুদ্ধের বাণী আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক : রাজ্যপাল