সবুজ ত্রিপুরা, বিশেষ প্রতিনিধি,
১৪ জুন : কার্গিল যুদ্ধ জয় “অপারেশন বিজয়”-এর ২০তম বর্ষ
উদযাপিত হবে এ বছর। কার্গিল যুদ্ধ হল দক্ষ রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সেনা কার্যক্রমের
এক বীর গাঁথা। দেশজুড়ে এই যুদ্ধ জয়ের ২০ তম বর্ষ গর্ব, সম্মান ও উৎসাহের সঙ্গে
পালন করা হবে। যুদ্ধ কৌশলগত দক্ষতায় দ্রুততার সঙ্গে তিন বাহিনীর সুনির্দিষ্ট
পরিকল্পনার সাহায্যে দেশের নিয়ন্ত্রণ রেখায় কার্গিল- সিয়েচেন সেক্টরে এই যুদ্ধ
জয়ের ঘটনা চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। যুদ্ধ কৌশলে আমাদের সেনাদের স্হির সংকল্প ও
সাহসীকতাও অবিষ্মরণীয়।
‘স্মরণীয়, আনন্দ এবং পুনরুদ্ধার’ এই থিমকে সামনে রেখে এবছর “অপারেশন বিজয়”-এর ২০ তম বর্ষ উদযাপন করা হবে। দেশের
সুরক্ষায় সেনাদের আত্মবলিদান আমরা সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করবো। কার্গিলের যুদ্ধ জয়
আমরা উদযাপন করব আনন্দের সঙ্গে। আর তেরঙ্গার সম্মান পুনরুদ্ধারের ঘটনা আমরা স্মরণ
করবো। এই কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্যই হল যুবদের মধ্যে জাতীয়তা ও
দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তোলা এবং শহীদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। এখন যারা যুবক,
যারা তৎকালীন সময় জন্মগ্রহণ করেনি, তাদের মধ্যে বীর সৈনিককদের যুদ্ধ জয়ের ঘটনা
তুলে ধরতে এবং দেশের যুবদের মধ্যে সেই গর্ব পুনঃপ্রজ্জ্বলিত করতে একাধিক অনুষ্ঠানের
পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আগামী ২৫-২৭ জুলাই নতুন দিল্লী এবং কাশ্মীর উপত্যকার দ্রাস
সেক্টরে তিনদিন ধরে ‘কার্গিল বিজয় দিবস’ উদযাপন করা হবে। যদিও মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সারা দেশজুড়ে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
এরই অঙ্গ হিসেবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,৮৭৫ ফিট উচ্চতায় অবস্হিত তোলোলিং ও টাইগার হিলের মতো জায়গায় পর্বত
অভিযানের আয়োজন করা হয়েছে। এমনকি সারা দেশের জাতীয় ক্যাডেট বাহিনী বা এনসিসি-এর ক্যাডেটদের জন্য ‘বিশেষ জাতীয় সংহতি ক্যাম্প’-এর আয়োজন করা হয়েছে। ১২দিনব্যাপী এই ক্যাম্প চলবে কাশ্মীরের লাদাখ প্রদেশের
রাজধানী লে-তে। এছাড়াও
লাদাখ অঞ্চলের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য রচনা এবং ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার
আয়োজন করা হয়েছে। ‘কার্গিল বিজয় দিবস’ লাদাখ অঞ্চলের মানুষের কাছে এক বিশেষ অনুষ্ঠান। তাই
এখানকার লোকেদের নিয়ে ‘এক দাওদ শশীধুন কি নাম’ শীর্ষক এক দৌড়
প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও পোলো, তীরন্দাজি, টি-২০ ক্রিকেট
চ্যাম্পিয়ানশিপ ইত্যাদি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায়
ভারতীয় সেনা, বিমানবাহিনী, আইটিবিপি এবং স্হানীয় ক্লাব সদস্যরা অংশ নেবেন। ‘অপারেশন বিজয়’-এ শহীদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে
আগামী ২৬ জুলাই দ্রাস সেক্টরে কার্গিল যুদ্ধ স্মারক স্থলে স্মৃতিতর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা
হয়েছে।
কার্গিল
যুদ্ধ জয়ের স্মরণে আগামী ১৪ জুলাই রাজধানীতে জাতীয় যুদ্ধ স্মারক স্হলে প্রদীপ
প্রজ্জ্বলন করা হবে। এরপর ১১টি শহর এবং নগর ঘুরে মশাল নিয়ে যাওয়া হবে দ্রাসের কার্গিল যুদ্ধ স্মারক স্থলে। এই মশাল দৌড়ের দলের সদস্যরা শিক্ষা এবং
দেশাত্মবোধক কথা প্রচার করবেন। কথা বলেবন বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব, ছাত্রছাত্রীদের
সঙ্গে।
কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে দিল্লীর
মানেকশ্ কেন্দ্রে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রাক্তন যুদ্ধ বিজয়ী
এবং কর্মরত সৈনিকরা অংশ নেবেন। আগামী ২৭
জুলাই বিশিষ্ট জনেদের উপস্থিতিতে ইন্দিরা
গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কার্গিল বিজয় দিবস সন্ধ্যা শীর্ষক এক সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ